বিতর্কিতকে সেনাপ্রধান করার জেরে শ্রীলঙ্কা শান্তি মিশনে বাদ
যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত এক মেজর জেনারেলকে সেনাবাহিনীর প্রধান পদে নিযুক্ত করায় শ্রীলঙ্কাকে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বাদ দিয়েছে জাতিসংঘ। এর আগে কয়েক দফা সংস্থাটি সতর্ক করেছিল এ বিষয়ে।
গত মাসে শাবেন্দ্র সিলভা নামে ওই মেজর জেনারেলকে এ পদোন্নতি দেওয়ার পর জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা কিছু দেশ উদ্বেগ জানিয়েছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কার সরকার পিছু না হটায় শেষতক জাতিসংঘ তাদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নিলো।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে সংস্থাটির উপ-মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, জেনারেল শাবেন্দ্রকে (সেনাপ্রধান পদে) নিয়োগ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের শান্তি কার্যক্রম বিভাগ শ্রীলঙ্কান সেনাবাহিনীকে ভবিষ্যতের কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বাদ দিচ্ছে।
শ্রীলঙ্কান সেনাদের একটি ইউনিট ও কিছু কর্মকর্তা বর্তমানে জাতিসংঘের একটি শান্তিরক্ষা মিশনে রয়েছেন। এদের সামনের মাসে বদল করে সেদেশেরই নতুনদের নিয়োগ দেওয়ার কথা। কিন্তু শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগের এই সিদ্ধান্তের কারণে সেখানে আর শ্রীলঙ্কান কাউকে স্থলাভিষিক্ত করা হবে না বলে জানান ফারহান হক।
জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্ত জানার পর শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবারই (২৭ সেপ্টেম্বর) দেশটির পররাষ্ট্র সচিব রবিনাথা আর্যসিনহা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগে কথা বলবেন।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, বর্তমানে আফ্রিকার লেবানন, সুদান ও মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ৪৯০ জন শ্রীলঙ্কান সেনা দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছর মালিতে একটি মাইন বিস্ফোরণে দু’জন লঙ্কান সেনা নিহতও হন।
জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এইচআরডব্লিউ। তারা বলছে, সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধ ধুয়ে ফেলার কারচুপি বিশ্ব সম্প্রদায় এড়িয়ে যাবে না, এই সিদ্ধান্ত সরকারগুলোর প্রতি এমনই কড়া সংকেত।
তামিল গেরিলাদের দমনে শ্রীলঙ্কান সেনাবাহিনীর সর্বাত্মক অভিযানের সময় মেজর জেনারেল শাবেন্দ্র ‘যুদ্ধাপরাধ’ করেছেন বলে জাতিসংঘের অভিযোগ রয়েছে। যদিও ৫৫ বছর বয়সী এই সেনা কর্মকর্তা সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিযোগ ও উদ্বেগের মধ্যেই শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনা শাবেন্দ্রকে সেনাপ্রধান পদে নিয়োগ দেন।