‘মিয়ানমারে রাসায়নিকের মজুত, ব্যবহার হতে পারে রোহিঙ্গা নিধনে’
রাসায়নিক অস্ত্র বিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষর করলেও মিয়ানমারের কাছে এখনও রাসায়ানিক অস্ত্রের মজুত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডসের হেগে রাসায়নিক অস্ত্র বিরোধীদের সংগঠনের (ওপিসিডব্লিউ) বার্ষিক সভায় এই আশঙ্কার কথা জানান স্টেট ডিপার্টমেন্টের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এমনকি মিয়ানমারে রাখাইন থেকে জাতিগত নিধন অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে বলেও যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে ওপিসিডব্লিউ’র সভায়।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষে সহকারী সেক্রেটারি থমাস ডিনান্নো বলেছেন, ওই কনভেশনে স্বাক্ষর করলেও সমসাময়িককালে রাসায়ানিক অস্ত্র তৈরি করছিল মিয়ানমার, তা আর ধ্বংস করেনি। তাই ঐতিহাসিকভাবেই সেই সময়ের কিছু মজুত এখনও দেশটিতে রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে মিয়ানমার আনুষ্ঠানিকভাবে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনে (সিডব্লিউসি) ১৯১তম দেশ হিসেবে যোগদান করে। ওই কনভেনশনের মাধ্যমে রাসায়নিক অস্ত্রের উৎপাদন, মজুত এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ১৯৮০ সাল থেকে রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচিতে নাম লিখিয়েছিল মিয়ানমার। তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমান রয়েছে, সেসময় উৎপাদিত সব রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করে ফেলেনি মিয়ানমার। কিছু তারা মজুত করে রেখেছে। এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
২০০৫ সালে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ আনে লন্ডনভিত্তিক অধিকার আন্দোলন ক্রিশ্চিয়ান সলিডারিটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড।
মিয়ানমারের একটি সংসদীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় একটি দস্তার খনিতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ফসফরাস ছোড়ে। ওই ঘটনায় ভয়াবহভাবে অগ্নিদগ্ধ হয় কয়েকজন।
এছাড়াও, ২০১৪ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর পাঁচ সাংবাদিককে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়। মিয়ানমারের আধাসামরিক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গত বছরে কচিন সম্প্রদায়ের বিদ্রোহীদের দমন করতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।