রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বজুড়ে মিয়ানমারকে বয়কটের ডাক
মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রচারণায় নেমেছে বিশ্বের ৩০টি মানবাধিকার সংস্থা, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী সংগঠন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসেই এই ক্যাম্পেইন শুরুর কথা জানাল আয়োজক সংগঠনগুলো। জার্মানভিত্তিক ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনস নামের প্ল্যাটফর্ম থেকে ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’শুরু করা হয়েছে।
সংগঠনটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন, ডেস্টিনেশন জাস্টিস, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস অব কানাডা, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ অব ইন্ডিয়াসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন মিলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এই প্রচারণা চালাবে। এছাড়া সংগঠনগুলো গণহত্যা মামলার শুনানিকে সামনে রেখে ৩০টি মানবাধিকার, শিক্ষাবিদ এবং পেশাদারদের সংগঠন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসে এসব সংগঠন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিয়ানমারকে বর্জনের আহ্বান সম্বলিত প্রচারণা শুরু করেছে।
এছাড়া কর্মসূচি নিয়ে বয়কট রোহিঙ্গা ডট অর্গ তাদের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নৃশংসতা, গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এর পক্ষে প্রত্যক্ষ ও নথিভুক্ত প্রমাণ রয়েছে। সারাবিশ্ব এর নিন্দা জানালেও হতাশার কথা, এ অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি।
ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নাই সান লুইন বলেছেন, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন স্পষ্ট করেছে যে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জাতিকে নির্মূল করে দেওয়ার একটি নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী হিসেবে আমরা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অধীনে ১৫ বছর গৃহবন্দি থাকা অং সান সুচির মুক্তির আন্দোলন করে এসেছি। তবে তিনি সেই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর শুধু খুনি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে চলছেন। তাই আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক ও আনুষ্ঠানিক সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই।
এমন একটা সময় এই প্রচারণা শুরু হলো, যখন গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের শুনানিতে নিজেদের পক্ষে সাফাই গাইতে নেদারল্যান্ডসের হেগে গেলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি। গাম্বিয়ার করা ওই মামলায় প্রথম শুনানি পর্ব চলবে ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর।