মিয়ানমারের বিক্ষোভে কাঁদানে গ্যাস-স্টান গ্রেনেড
মিয়ানমারের সর্ববৃহৎ শহর ইয়াঙ্গুনে শনিবারও বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভ দমনে ছোড়া হয়েছে কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড।
বিক্ষোভকারীদের হত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত জান্তা সরকারকে আহ্বান জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটলো।
এদিন মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ হয়েছে। ইয়াঙ্গুনের সানচাং এলাকায় একটি বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে সেখানে কোনো বিক্ষোভকারীর হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দাউইতে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ‘গণতন্ত্রণই আমাদের উদ্দেশ্য’, ‘বিপ্লব অবশ্যই জয়ী হবে’ বলে শ্লোগান দেন। বিক্ষোভকারী এক নেতা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বিপ্লবের যে স্পন্দন শুরু হয়েছে তা হারাতে দিতে পারি না আমরা। যারা সাহস করে লড়াই করে তারাই জয়ী হয়। আমরা জয়ী হবো।’
শনিবার অস্ট্রেলিয়ায় সিডনিতে বিক্ষোভ হয়েছে। কয়েকশত লোক গান গেয়ে ও তিন আঙ্গুল উঁচিয়ে প্রতিবাদ জানান। সিডনিতে মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধী এই প্রতিবাদ কর্মসূচির সংগঠক থেইন মোয়ে উয়িন বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দাবি করছে, সংযতভাবে বিক্ষোভ বন্ধের চেষ্টা করছে তারা। তবে দেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয় এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেছে।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন সেনাবাহিনী সরকারকে হটিয়ে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিকে গ্রেপ্তার করে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে এমন অচলাবস্থা শুরু হয়েছে। প্রাত্যহিক বিক্ষোভ ও অবরোধের কর্মসূচির কারণে ব্যবসায়িক পরিবেশ রুদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অচল হয়ে গেছে প্রশাসনিক কাঠামো।
জাতিসংঘের হিসাবে, অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারী নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা তাদের নেত্রী সু চির মুক্তি ও গত নভেম্বরের যে নির্বাচনে সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় পেয়েছিল তার ফল মেনে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে।