অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিরাপদ-কার্যকর
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনা ভাইসারের (কোভিড-১৯) টিকা ‘নিরাপদ ও কার্যকর’ বলে জানিয়েছে উরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি (ইএমএ)।
সংস্থাটির মতে, এই টিকা নিরাপদ। রক্ত জমাট হওয়া নিয়ে যা বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে এই টিকা নেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ১৩টি দেশ বলছে, এই টিকা প্রয়োগের পর মানুষের দেহে রক্ত জমাট বাঁধার মতো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য ১৩টি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ বন্ধ করার পর বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত জানায় সংস্থাটি।
ইএমএ বৃহস্পতিবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকার ব্যাপারে এ ঘোষণা দেয়। সেখানে বলা হয়েছে, রক্তে জমাট বাঁধার বড় ধরনের ঝুঁকির সঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা নেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে, টিকা প্রয়োগ বন্ধ বা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত স্বতন্ত্রভাবে সদস্য দেশগুলোকে নিতে হবে।
এ বিষয়ে ইএমএ’র নির্বাহী পরিচালক এমার কুক বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিরাপদ ও কার্যকর। কোভিডের বিরুদ্ধে এটি গ্রহণে ঝুঁকির চেয়ে উপকার বেশি।
তিনি জানান, ইএমএ’র মেডিসিন্স নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা পর্যালোচনার পর বলেছেন, রক্তে জমাট বাঁধার ঝুঁকির সঙ্গে ভ্যাকসিনটির কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু ভ্যাকসিন ও জমাট বাঁধার সঙ্গে যোগসূত্র না থাকার বিষয়টি একেবারে বাতিল করতে পারছে না। অল্প কয়েকটি বিরল ও অস্বাভাবিক ক্ষেত্রে গুরুতর রক্তে জমাট বাঁধার ঘটনা পাওয়া গেছে।
এমার কুক আরও জানান, তাই কমিটির পক্ষ থেকে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে সচেতনতা তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ঝুঁকির বিষয়টি যাতে পণ্যের তথ্যে যুক্ত করা হয়। অধিকতর অনুসন্ধান করা হবে।
এদিকে এমন ঘোষণা আসার পর ইতালি সরকারিভাবে জানিয়েছে, শুক্রবার (১৯ মার্চ) থেকেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকার প্রয়োগ আবার সেখানে শুরু করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন প্রয়োগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছিল।
সংস্থাটি বলেছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা কার্যকর ও নিরাপদ। তবে শুক্রবার সংস্থাটি তাদের নিজস্ব পর্যালোচনার ফল জানাবে।
আর অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ এরই মধ্যে তাদের তৈরি করোনার টিকা গ্রহণ করেছে। আর রক্ত জমাট বাঁধার যেসব ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে, সেটি সংখ্যায় শতাধিকের কম। এটি মোট জনসংখ্যার তুলনায় স্বাভাবিক।
সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। টিকা নিলে রক্ত জমাট বাঁধছে, এমন অভিযোগের পর সতর্কতার অংশ হিসেবে বেশকিছু দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কর্মসূচি স্থগিত করে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রিয়া, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, দ্য নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, স্পেন ও সুইডেন অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকার প্রয়োগ বন্ধ ঘোষণা করে। এছাড়া আইসল্যান্ড ও নরওয়েও এই টিকার প্রয়োগ বন্ধ ঘোষণা করেছে।