কাবুলে ১০ বেসামরিক নাগরিক হত্যার কথা স্বীকার করল যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন সেনাবাহিনী গত ২৯ আগস্ট আফগানিস্তানে যে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল তাতে ১০ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে সাতজনই ছিল শিশু। তাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিল সুমাইয়া। তার বয়স ছিল মাত্র ২ বছর।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি এক বিবৃতিতে ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তবে ড্রোন হামলার পর তারা দাবি করেছিলেন, হামলায় যারা মারা গেছেন তারা সবাই সন্ত্রাসী।
গত ২৬ আগস্ট কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইএসকে’র আত্মঘাতী হামলার জবাবে ড্রোন হামলা চালায় মার্কিন সেনাবাহিনী।
দেশটির নিয়ন্ত্রণ তালেবানের কাছে চলে যায় গত ১৫ আগস্ট। এরপর দেশটি ছাড়তে কাবুল বিমানবন্দরে জড়ো হন অনেকে। তাদের নিতে ফ্লাইট পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র।
ওই সময় বিমানবন্দর এলাকায় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। গত ২৬ আগস্টের ওই হামলায় অন্তত ১৭০ বেসামরিক নাগরিক ও ১৩ মার্কিন সেনা নিহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেটের আফগানিস্তান শাখা আইএস-কে (ইসলামিক স্টেট–খোরাসান)।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই হামলার কয়েক দিন পর গত ২৯ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দরের কাছে একটি গাড়িতে ড্রোন হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। হামলার স্থানটি ছিল কাবুল বিমানবন্দর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে।
ওই মার্কিন ড্রোন হামলায় একজন ত্রাণসহায়তা কর্মী ও তার পরিবারের নয় সদস্য নিহত হন। তাদের সাতজনই ছিল শিশু।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের তদন্তে উঠেছে এসেছে যে, ওই ড্রোন হামলা চালানো হয় কাবুল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আগের দিন।
হামলার পর পেন্টাগন দাবি করেছিল, কাবুল বিমানবন্দরে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের জন্য বিরাট ঝুঁকি সৃষ্টি করেছিল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এ জন্য সন্ত্রাসীদের ওপর ওই হামলা চালানো হয়।
তবে এখন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি ওই হামলাকে ‘মর্মান্তিক ভুল’ বলে মনে করছেন। তার মতে, ওই ড্রোন হামলা চালানোর আট ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা মনে করে, ত্রাণসহায়তা কর্মীর ব্যক্তিগত গাড়িটি আইএস–কের কোনো আত্মঘাতী হামলাকারীর।