গাছের চেয়ে দ্রুত গ্রিনহাউস গ্যাস শোষণ করতে সক্ষম অণু আবিষ্কার
কার্বন ডাই-অক্সাইড সংরক্ষণ করতে পারে এমন একধরনের ছিদ্রযুক্ত উপাদান আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি নেচার সিনথেসিস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণার বরাতে আজ সোমবার এই খবর জানিয়েছে দ্য ইনডিপেনডেন্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় অবস্থিত হেরিওট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, একধরনের ফাঁপা ও খাঁচার মতো অণু কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং সালফার হেক্সাফ্লোরাইডের মতো গ্রিনহাউস গ্যাসকে বিপুল মাত্রায় স্টোরেজ করতে সক্ষম।
সালফার হেক্সাফ্লোরাইড হলো কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে আরও শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস এবং মানবসৃষ্ট এই গ্যাস বায়ুমণ্ডলে হাজার হাজার বছর ধরে টিকে থাকতে পারে।
গবেষণাটির নেতৃত্ব দেওয়া ড. মার্ক লিটল বলেছেন, ‘এটি একটি উত্তেজনাপূর্ণ আবিষ্কার। কারণ, সমাজের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করতে আমাদের নতুন ছিদ্রযুক্ত উপকরণটি প্রয়োজন।’
লিটল মত দিয়েছেন, বাতাস থেকে সরাসরি কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভবিষ্যতে যদি কার্বন ডাই-অক্সাইডের নির্গমন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভবও হয়, তারপরও পরিবেশে আগে থেকেই বিদ্যমান এই গ্যাস শোষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন আবিষ্কার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
লিটল বলেন, ‘কার্বন শোষণের জন্য গাছ লাগানো খুবই কার্যকর একটি উপায়। কিন্তু এটি খুব ধীর পদ্ধতি। তাই পরিবেশ থেকে আরও দ্রুত গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোকে দক্ষতার সঙ্গে শোষণের জন্য আমাদের একটি মানবিক হস্তক্ষেপ দরকার। হতে পারে তা মানুষের সৃষ্টি করা একটি অণু।’
ড. লিটল গবেষণাটিকে অন্যান্য উপাদানের বিকাশের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। দাবি করেছেন, অণুগুলো বায়ু থেকে উদ্বায়ী জৈব যৌগ হিসেবে পরিচিত বিষাক্ত যৌগগুলোকে অপসারণের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি চিকিৎসাবিজ্ঞানেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
হেরিওট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি গবেষণাটিতে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ, সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইস্ট চায়না বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জড়িত ছিলেন।
এই প্রকল্পে প্রকৌশল ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণা কাউন্সিল এবং লেভারহুলমে ট্রাস্ট দ্বারা অর্থায়ন করা হয়েছিল। গবেষণাটি যুক্তরাজ্যের ডায়মন্ড লাইট সোর্স রিসার্চ ফ্যাসিলিটি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের হরাইজন-২০২০ গবেষণা প্রোগ্রাম এবং রয়্যাল সোসাইটি পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।