শিরোনাম
৮ নভেম্বর লন্ডনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া! যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের জার্মানিতে ইরানের সব কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা কড়া নিরাপত্তায় নয়াদিল্লির বাংলোয় আছেন শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে দাঁতভাঙা জবাব পাবে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র: খামেনি নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 18 October, 2024 12:25

হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার হত্যা

হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার হত্যা
মেইল রিপোর্ট :

ইসরাইলি সেনাবাহিনী দীর্ঘ এক বছর ধরে হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে খুঁজছিল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী এই নেতার খোঁজে ইসরাইলি বাহিনী বিভিন্ন অভিযান চালিয়েছিল। অবশেষে, দক্ষিণ গাজায় তাকে হত্যার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। 

৬১ বছর বয়সী ইয়াহিয়া সিনওয়ার অধিকাংশ সময় টানেলের মধ্যে কাটিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন তার দেহরক্ষীরা। এছাড়া ছিল ইসরাইলি জিম্মিরা। শেষ পর্যন্ত তাকে দক্ষিণ গাজায় পাওয়া গেলেও কোনো জিম্মিকে পাওয়া যায়নি। সিনওয়ার হত্যাকাণ্ডে এখনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। 

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, বুধবার রাফার তাল আল সুলতানে একটি নিয়মিত টহলের সময় তিন যোদ্ধাকে শনাক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে একজন সিনওয়ারের মতো মনে হলে পরে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তার একটি আঙুল কেটে নেওয়া হয়। সেনাবাহিনী ওই স্থানে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অবস্থান করে এবং ড্রোনের মাধ্যমে হামলা চালিয়ে সিনওয়ারকে হত্যা করে। শেষ পর্যন্ত তার দেহ উদ্ধার করে ইসরাইলে পাঠানো হয় এবং এলাকাটি নিরাপদ ঘোষণা করা হয়। 

আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানান, তাদের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল না যে সিনওয়ার ওই এলাকায় উপস্থিত ছিলেন। তবে অপারেশন অব্যাহত ছিল।

এদিকে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমা বেশ কয়েকটি দেশ। এটিকে ইসরায়েলের জন্য বড় সাফল্য বলে মনে করছে এসব দেশ। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা জোরদার করবে বলে প্রত্যাশা করছে তাদের। 

হামাসপ্রধানকে হত্যার খবরে বিবৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের জন্য আজ একটি শুভদিন। ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ায় গাজার বুকে হামাসের ক্ষমতার অবসান ঘটবে। একটি রাজনৈতিক মীমাংসার সুযোগ তৈরি হবে। এতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিরা একটি ভালো ভবিষ্যৎ উপহার পাবে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, সিনওয়ারকে খুনের মিশনে সফল হওয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাইডেন। বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, সে ব্যাপারে কথা বলেছেন তারা। এ ছাড়া ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যুদ্ধের সমাপ্তি টানার বিষয়েও তাদের মধ্য কথা হয়েছে। 

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের মিলওয়াকিতে এক নির্বাচনী সমাবেশে কমলা হ্যারিস বলেছেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি শুধু এটুকু আশা করতে পারি যে হামাসের কারণে যেসব পরিবার ভুগছে, তারা এখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবে।

হামাসপ্রধানের নিহত হওয়ার খবরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ইহুদিদের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দিনটির জন্য দায়ী ইয়াহিয়া সিনওয়ার। যুক্তরাজ্য তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করবে না। তিনি বলেন, জিম্মিদের মুক্তি, যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি লম্বা সময় ধরে বিলম্বিত হচ্ছে। এখন আমরা মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি এবং টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যেতে পারি। 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, "হামাসের নৃশংস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে আইডিএফ দ্বারা নির্মূল করা হয়েছে। সিনওয়ারের নেতৃত্বে, হামাস ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ নৃশংসতা চালিয়েছিল। সে ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল এবং সারাদেশে বেসামরিক নাগরিকদের উপর নির্বোধ, ধ্বংসাত্মক হামলা শুরু করেছিল। অঞ্চলটি আজ তার শিকার ও তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার দিয়েছে। পাশাপাশি একটি রাজত্বের অবসান ঘটিয়েছে।"

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক বলেছেন, "সিনওয়ার ইসরায়েল ও এর জনগণকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। ৭ অক্টোবরের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তিনি হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু এবং পুরো অঞ্চলের জন্য দুর্ভোগ নিয়ে এসেছিলেন। হামাসকে এখনই সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে এবং অস্ত্র ফেলে গাজার মানুষের দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে হবে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, “ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ৭ অক্টোবরের গণহত্যার প্রধান অপরাধীর মৃত্যু হল। আমার বিশ্বাস, একটি নতুন পর্যায় এখন শুরু হওয়া উচিত। এখন সব জিম্মিকে মুক্তি দেয়া, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা এবং গাজায় পুনর্গঠন শুরু করার সময় এসেছে। আমরা এই প্রচেষ্টাগুলোকে জোরালোভাবে সমর্থন করবো এবং একটি গুরুতর ও বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করতে কাজ করবো, যা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সহজ করবে।”

ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট  ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি এ ঘটনাকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য বড় সাফল্য বলে মন্তব্য করে বলেন, জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা এবং যুদ্ধ শেষ করার জন্য এ সুযোগকে কাজে লাগানো উচিত। এখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করা জরুরি বলেও মনে করছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার দাবি করে ইসরায়েল। বুধবার দক্ষিণ গাজায় এক অভিযান চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয় বলে জানায়ে দখলদার বাহিনী। হামাসের সাবেক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার কয়েকমাসের মধ্যেই সিনওয়ারকে হত্যা করলো ইসরায়েল।

উপরে